প্রতি ভারতবাসীর সুস্বাস্থের কথা মাথায় রেখে ফর্টিফায়েড চাল সর্বত্র দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এলো ভারত সরকার যেখানে মিড ডে মিল থেকে রেশন সবর্ত্রই দেওয়া হবে এই চাল। রেশনে সাধারণ চালের বদলে বিশেষ গুণমান সম্পন্ন ফর্টিফায়েড চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করছে সরকার। আগামী বছরের শুরুর দিক থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু করার কথা ভাবছে খাদ্যমন্ত্রী দপ্তর। খাদ্যের পুষ্টিগত মান উন্নত করার জন্য এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নানারকম ঝুঁকি এড়াতে বা এককথায় জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সরকারের এই নতুন প্রয়াস। এই জন্যে সরকারের খরচা হতে চলেছে আনুমানিক বছরে সাতাশো কোটি টাকা যা ২০২৪ সাল এর মধ্যে পুরো দেশে বাস্তবায়ন করা হবে ।
ফর্টিফায়েড চাল কি?
ধান থেকে যখন চাল তৈরি হয় তখন বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ পদার্থ বাদ চলে যেতে পারে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সেই ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ ফেরানো হয় চালে, একে ফর্টিফিকেশন বলা হয়। ফর্টিফায়েড চালে মূলত আয়োডিন, ভিটামিন বি-১২ আর ফলিক অ্যাসিড থাকে। সাধারণ চালে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যোগ করে সেটাকে ফর্টিফায়েড চালে পরিণত করা হয়। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যোগ করার জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়। যেমন – কোটিং, ডাস্টিং এবং এক্সটুরশন। ফর্টিফায়েড রাইসের গুণমান বিচার করে দেবে FSSAI (Food Safely and Standards Authority Of India).
এই প্রকল্পের কারণ
চাল হল ভারতবর্ষের প্রধান খাদ্য। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে প্রত্যেক মানুষ পিছু মাসে ৬-৭ কেজি চাল লাগে। প্রতি বছর অপুষ্টির কারণে বহু পথশিশু বা অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু হয়। পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে সরকার একাধিক প্রকল্প চালু রেখেছে। ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের দিন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, অপুষ্টির জন্য গরীর পরিবারের সন্তানরা সমস্যায় ভুগছে। তাই সরকারিভাবে পুষ্টিকর চাল সরবরাহ করা হবে। ২০২৪ সালের মধ্যে সারা দেশে এই পুষ্টিকর চাল পৌঁছে দেওয়া হবে। দেশের অপুষ্টি দূর করার জন্যই এই প্রচেষ্টা। কিন্তু তার জন্য আরও উন্নত পরিকাঠামো প্রয়োজন। বর্তমানে ফর্টিফায়েড চালের যে কেন্দ্রীয় প্রকল্প রয়েছে এবং তার জনসাধারণের বন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে বিতরণের জন্য যে ১৫টি রাজ্যকে বেছে নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে পাঁচটি রাজ্য পাইলট ভিত্তিতে একেকটি জেলায় এটি বাস্তবায়ন করছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, ও ছত্তিশগড় সুরক্ষিত চাল বিলি শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বিশেষজ্ঞদের দাবি যাদের অ্যানিমিয়া বা অন্যান্য রক্তজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের ফর্টিফায়েড চাল খাওয়ানো কোনো সমাধান নয়। এই ধরনের ফর্টিফায়েড রাইস খাওয়ানোর আগে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসকদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া দরকার। অ্যানিমিয়া আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এই ধরনের চাল খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। এদিকে কিছু গবেষণায় আবার দেখা যাচ্ছে এই ধরনের ঘাটতি মেটাতে বায়োফর্টিফায়েড খাবার কাজে দেয়।
নমস্কার ,আমি বিনায়ক ব্যানার্জী। আশুতোষ কলেজ থেকে Communicative English hons. নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর শ্রীরামপুর কলেজ থেকে Mass communication and journalism এ ডিপ্লোমা করি। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সার (Health Blogger/Health Content Writer) হিসেবে কাজ করি।