Copy of Copy of Copy of Copy of Add a little bit of body text min

রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার কারন লক্ষণ এবং প্রতিরোধের উপায়

রক্তাল্পতা ( Anemia ) বা  রক্তশূন্যতা হলো এমন একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে বিভিন্ন কারনে রক্তে লোহিত রক্তকণিকা (RBC) বা হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিকের  চেয়ে অনেক কমে যায় । যার ফলে রক্তের অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং আমাদের শরীরে বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশিত হয় । 

রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া কী  

আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন এর স্বাভাবিক একটি মাত্রা আছে যা পুরুষ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন হয় । পুরুষদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১৮.৩ থেকে ১৭.২ গ্রাম/ ডেসিলিটার এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২.১ থেকে ১৫.১ গ্রাম/ডেসিলিটার । কোন কারনে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যদি এর থেকে কম হয় তখন সেই অবস্থা কে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া ( Anemia ) বা রক্তশূন্যতা বা রক্তাল্পতা বলা হয় ।

রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার কারন:

বিভিন্ন কারনে রক্তাল্পতা হতে পারে , এর মধ্যে কিছু কারন গুলি হল –

  • আয়রন এর অভাব  –  এটি রক্তাল্পতার সবচেয়ে সাধারন কারন । আমাদের অস্থিমজ্জা হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে আয়রন এর প্রয়োজন হয় । খাবার দাবারের মাধ্যমে আমাদের দেহে  আয়রনের সরবরাহ সঠিক না হলে  আয়রনের  অভাব দেখা দেয় ফল স্বরুপ  অস্থিমজ্জা লোহিত রক্ত কনিকার জন্য হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে পারে না , যা শেষ পর্যন্ত রক্তাল্পতার কারন হয় ।
  • অতিরিক্ত রক্তপাত – বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ( গাড়ি এক্সিডেন্ট , অসাবধানতাবসত কেটে যাওয়া ইত্যাদি ) , অথবা বিভিন্ন শারীরিক অবস্থায় ( যেমন মহিলাদের মাসিক রক্তপাত ) অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হলে রক্তাল্পতা দেখা দেয় । 
  • ভিটামিন এর অভাব  –  ভিটামিন বি৯  এবং ভিটামিন ব ১২ এর অভাবে  রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে ।
  • অন্যান্য কারন – কোনও কারনে  লোহিত রক্তকণিকার উতপাদন ব্যহত হলে অথবা উতপাদনের তুলনায় তাড়াতাড়ি নষ্ট হলে ,লিকউকমিয়া ,মাইলোফাইব্রোসিস ইত্যাদি কারনে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে । এছাড়াও,পেপটিক আলসার, কৃমি, পাইলস, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার ওষুধ সেবন ইত্যাদি কারণে রক্তাল্পতা হতে পারে।

বিভিন্ন প্রকার রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া

  • আয়রনের অভাবজনিত রক্তাল্পতা ।
  • পের্নিসিয়াস অ্যানিমিয়া ( Anemia ) – ভিটামিন এর অভাবজনিত রক্তাল্পতা ।
  • এপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া ( Anemia ) – লোহিত রক্ত কনিকার ( RBC ) অভাব জনিত রক্তাল্পতা ।
  • হেমলয়টিক অ্যানিমিয়া ( Anemia ) – লোহিত রক্ত কনিকা নষ্ট হলে এই প্রকার রক্তাল্পতা হয় ।
  • রক্তপাত জনিত অ্যানিমিয়া ( Anemia ) ।

রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার লক্ষন

  • মাথাব্যথা
  • ক্লান্তি
  • অবসন্নতা
  • বমি বমি ভাব
  • হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়
  • গায়ের রঙ ফ্যাকাসে হয়ে যায়
  • নখ হলদেটে হয়ে যায়
  • ডাইরিয়া
  • ওজন কমে যায় / ওজন বেড়ে যায় কখনও কখনও 
  • সর্দি কাশির প্রবনতা
  • শ্বাসকষ্ট
  • দৃষ্টি শক্তি কমে যায়
  • অ্যাসিডিটি
  • নখ ভঙ্গুর হয়ে যায়
  • সদ্যজাতের মায়ের দুগ্ধ উৎপাদন পর্যাপ্ত হয় না।
  • স্মৃতিভ্রষ্ট

রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া  প্রতিরোধের উপায়

আয়রন জাতীয় খাবার –  আয়রনের অভাভ পুরন করতে প্রতিদিন আয়রন জাতীয় খাবারের উৎস মেনুতে রাখা প্রয়োজন ।পাঁঠা ও ভেঁড়ার মাংস  মুরগীর মাংস , মুরগীর লিভার , ডিম , সয়াবিন , বাদাম ,সবুজ শাঁক ,বিন্স, ব্রকলি ইত্যাদি আয়রনের উৎস হিসেবে নেওয়া যেতে পারে ।  

ভিটামিন B9 ( ফোলেট ) – মুরগীর মাংস,লিভার,  সবুজ শাঁক সবজি , মটরশুঁটি ,রাজমা, বাদাম , লেবু জাতীয় ফল ইত্যাদি  প্রতিদিন খাবার দাবারে রাখা যায় ।

ভিটামিন B12 –  মুরগীর মাংস, ডিম ,লিভার, দুধ  ইতাদি প্রতিদিন খাবার দাবারে রাখা যায় ।

ভিটামিন C –  ভিটামিন C আয়রনের শোষণ ভালো ভাবে হতে সহায়তা করে, তাই  প্রতিদিন খাবার প্লেটে ভিটামিন C এর উৎস হিসেবে একটুকরো লেবু রাখতে পারেন ।

কৃমিনাশক অসুধ – অতিরিক্ত কৃমির প্রকোপও রক্তাল্পতার অন্যতম কারন তাই মাঝে মাঝে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে কৃমিনাশক অসুধ সেবন করা প্রয়োজন ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

You cannot copy content of this page