খালি পেটে লেবু জল খাওয়া কী বাঞ্ছনীয় ?

আমাদের শরীরে লেবুর জল কিভাবে কাজ করে তা অনেকেরই জানা নেই। আমরা এটাই শুধু জানি যে লেবু জল খালি পেটে খাওয়া উচিতা। কিন্তু কিভাবে আর কতটা খাওয়া উপকারী বা শরীরে এর কি প্রভাব সেটা জানা দরকারি। এটা অনেকেই ভাবেন যে লেবু জল আমার শরীর থেকে অপকারী ,অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে । কিন্তু তা হয় না , তাহলে কী হয় ? আজকের এই লেখাতে পুরো ব্যপারটা আমি পরিস্কারভাবে বোঝানোর চেষ্টা করবো ।

লেবু জল আপনার শরীরে ডিটক্স করে না বা শক্তির জোগান দেয় না, তবে এটি আপনার শরীরকে অন্যান্য উপায় প্রভাবিত করতে পারে। আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে আপনার প্রতিদিনের খাবারে লেবুর রস অল্প মিশিয়ে দিয়ে বা হালকা গরম জল পান করা আপনার শরীরকে ডিটক্সিফাই করবে এবং শক্তি যোগাবে তবে তা কিন্তু ঘটে না। তবে স্পষ্টতই এটি ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উৎস সরবরাহ করে। যা রোজকার খাবারে  থাকা উচিত। ভিটামিন সি কখনও আপনার শরীরে জমা হয় না। এটি প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্গত হয়। তবে এটি ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরলযুক্ত লোকেদের সাহায্য করতে পারে। 

একইভাবে যদি কেউ প্রতিদিন লেবু জল পান করে তবে আপনার কি দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হয়? সেটা অসম্ভাব্য। কোন ক্ষতি শরীরের হয় না। ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করে।


আপনার কি অতিরিক্ত ভিটামিন সি দরকার ?

লেবুর রসে রয়েছে ভিটামিন সি, একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন সি-এর অভাবে স্কার্ভি রোগ হতে পারে বলে আমরা অনেক আগেই জানি। এই অবস্থাটি সাধারণত ডায়েটে তাজা ফল এবং শাকসবজি না পাওয়ার সাথে সম্পর্কিত। যদি আপনার ভিটামিন সি কম থাকে তবে লেবুর জল খাওয়া আপনাকে সাহায্য করতে পারে। ভিটামিন সি 30-40 ডিগ্রি সেলসিয়াসে হ্রাস পেতে শুরু করে। আপনার খাদ্যে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি থাকলে,অতিরিক্ত কিছু ভিটামিন সি আপনার প্রস্রাবের মাধ্যমে ভিটামিন সি হিসেবেই বা অক্সালেট হিসাবে নির্গত হবে। তাই হালকা গরম জল সাথে লেবুর রস খাওয়া র পাশাপাশি আপনার খাবারে লেবুর রস ব্যবহার করা যেতে পারে। উভয়ের জন্য একই উপকারিতা। লেবুর গুয়াগুন সেক্ষেত্রে একই থাকবে।

ডিটক্সিং, শক্তিবর্ধক, বা প্রশান্তিদায়ক হিসাবে লেবুর জল

আমাদের শরীর ইতিমধ্যেই বাইরে থেকে খাওয়া লেবু জলের অতিরিক্ত সাহায্য ছাড়াই ডিটক্স করতে সক্ষম । আমাদের শরীর লিভারের টক্সিন বা অতিরিক্ত নিউট্রিয়েনট ভেঙ্গে ফেলে এবং সেই মলিকুল গুলি । কিডনির মাধ্যমে এবং আপনার প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। ভিটামিন সি এটি ঘটাতে সাহায্য করে এমন কোন প্রমাণ নেই । আপনার যদি সত্যিই একটি ডিটক্সের প্রয়োজন হয় তবে সেক্ষেত্রে আপনার লিভার বা কিডনি সঠিকভাবে কাজ করছে না। একইভাবে লেবুর রস আপনাকে শক্তি জোগাবে না। যাইহোক, বেশিরভাগ নিউট্রিইয়েনট  এর মতো, আপনি যদি সেগুলি পর্যাপ্ত না পান দৈনন্দিন খাবার থেকে,তবে লেবুর জল খেলে আপনি শক্তি অনুভব করতে পারেন। একইভাবে কিছু লোক উষ্ণ পানীয়কে প্রশান্তিদায়ক বলে মনে করে, অন্যরা ঠান্ডা  লেবুর জল পছন্দ করে। লেবুর জল খাবার  জন্য সর্বোত্তম তাপমাত্রা সেটাই হওয়া উচিত , যেটা খেলে তার রেলিফ হই এবং হাইড্রেটেড থাকার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে পান করা উচিত।

তাহলে আমার কি লেবু জল পান করা উচিত ?

যদি লেবু জল পান করার আরাম পান তবে পান করুন! কিন্তু যদি আপনি না করেন,তাহলে কিছু মিস করা হয় না.
আপনি অন্যান্য সাইট্রাস ফল, সেইসাথে অন্যান্য ফল এবং সবজি থেকে ভিটামিন সি পেতে পারেন। তাই আপনি এটি প্রস্তাবিত ডোজ হিসাবে পেতে পারেন। আরও উদ্বেগের বিষয় হল দাঁতের এনামেল ক্ষয় করার ক্ষমতা, তবে এটি যেকোনো সাইট্রিক ব্রেভারেজের জন্য একটি সমস্যা। তাই লেবু জল পান করার পর কলের জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। লেবু জল কিছু লোকের প্রায়শই প্রস্রাব করার মতো অনুভূতি হতে পারে। লেবুর জল অ্যাসিড রিফ্লাক্স (হার্ট বার্ন) করে। তাই GERD থাকা লোকেদের এড়িয়ে চলাই ভালো।তাই লেবু জল খাওয়ার পরে যদি আপনি ভাল অনুভব করেন তবে আপনি এটি প্রতিদিন খেতে পারেন, এতে কোনও ক্ষতি নেই।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You cannot copy content of this page