ভিটামিন – এ হল ফ্যাট দ্রবীভূত ভিটামিন গুলোর একটি , অর্থাৎ এই ভিটামিন আমাদের শরীরে ( প্রধানত লিভারে ) জমা হয়ে থাকতে পারে । এই ভিটামিন মূলত প্রাণীজ খাবারে পাওয়া যায় রেটিনল রুপে । উদ্ভিজ জাত খাবারেও ভিটামিন – এ পাওয়া যায় তবে বিটা ক্যারোটিন রূপে , যা হল ভিটামিন – এ এর প্রিকারসার , এটি শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী ভিটামিন -এ তে রুপান্তরিত হয় ।
ভিটামিন-এ এর উৎস
উদ্ভিজ্জ উৎস
মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়ো, গাজর, টমেটো, পেঁপে, পালংশাক, পাকা আম, বাঁধাকপি এবং কিছু উদ্ভিজ্জ তেলে ভিটামিন এ থাকে।
প্রাণীজ উৎস
দুধ, ডিমের কুসুম, মাখন, মাছ ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
কড, হাঙ্গর, হ্যালিবাট মাছের যকৃত নিঃসৃত তেলে এই ভিটামিন প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়।
মানবদেহে ভিটামিন এ এর প্রয়োজনীয়তা –
ভিটামিন এ মানুষের দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে –
চোখের দৃষ্টি ভাল রাখতে ভিটামিন – এ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে , কারন ভিটামিন- এ এর সহায়তায় রডপ্সিন সাইকেল সম্পূর্ণ হয় আর এর অভাবে রডপ্সিন সাইকেল ব্যহত হয়, ফল স্বরুপ রাতকানা বা নাইট ব্লাইন্ডনেস রোগ দেখা দেয় যা সঠিক সময়ে ভিটামিন এর অভাব পুরন না করলে আক্রান্ত ব্যাক্তি সারাজীবনের জন্য অন্ধত্তের শিকার হতে পারেন ।
ফ্রি রেডিকেল প্রতিরোধ করে –
ভিটামিন – এ ( বিটা ক্যারোটিন ) এর শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট ধর্মীয়তার জন্য এটি ওক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে সৃষ্ট ফ্রি রেডিকেল থেকে আমাদের রক্ষ্যা করে যা কিনা ডায়াবেটিস ,ক্যান্সার ,হৃদরোগ এর মতো মারন রোগের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে ।
ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বাড়ায় –
ভিটামিন -এ আমাদের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা কে শক্তিশালী করে তোলে যার জন্য আমরা নীরোগ শরীর নিয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারি ।
ভিটামিন এ এবং যৌন স্বাস্থ্য –
ভিটামিন – এ পুরুষ এবং মহিলাদের যৌন স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ভুমিকা নেয় । ন্যশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউট্রেশন এর এক গবেষনা অনুযায়ী ( ২০০০-২০০১ ) যে মহিলাদের শরীরে ২০ মাইক্রগ্রাম/ডেসিলিটার এর কম ভিটামিন এ রয়েছে তাদের প্রি-টার্ম ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
অন্যান্য কাজ
তাছাড়া ভিটামিন এ ত্বকের কোমলতা বজায় রাখে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ।
মানবদেহে ভিটামিন এ এর অভাবজনিত লক্ষণ –
১. এর অভাবে রাতকানা ,করনিয়াল জেরোসিস ,জেরফথাল্মিয়া , কেরাটমালাশিয়া রোগ হয়।
২. মেরুদন্ড এবং করোটির অস্থি বৃদ্ধি করে ভিটামিন এ।
৩. পরিপাক নালী, শ্বাসনালীর আবরণী কলা, স্নায়ু ইত্যাদির ক্ষয় হয় ভিটামিন-এ এর অভাবে।
৪. রেনাল স্টোন বা বৃক্কে পাথর সৃষ্টি হয় ।
৫. কেরাটোম্যালাসিয়া দেখা যায় অর্থাৎ চোখের কর্ণিয়া নষ্ট হয়ে যায় ৷
মানবদেহে ভিটামিন -এ এর রিকমেন্ডেড ডোজ –
ICMR ( 2020 ) এর রিপোর্ট অনুযায়ী সুস্থভাবে জীবনধারন করতে পুরুষদের প্রতিদিন ১০০০ মাইক্রগ্রাম , মহিলাদের প্রতিদিন ৮৪০ মাইক্রগ্রাম এবং গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিন ৯০০ মাইক্রগ্রাম ভিটামিন এ এর প্রয়োজন ।