হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ হল হৃদরোগের প্রধান কারন গুলোর মধ্যে একটি । আমাদের স্বাভাবিক রক্তচাপের মাত্রা হল ১২০/৮০ ( সিস্টলিক ১২০ এবং ডায়াস্টলিক ৮০ ) । কিন্তু কোন কারনে যদি এটি স্বাভাবিক মাত্রা ছাড়িয়ে ১৪০/৯০ ( সিস্টলিক ১৪০ এবং ডায়াস্টলিক ৯০) এর উপরে চলে যায় তখন তাকে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ বলা হয় ।
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ কে নিয়ন্ত্রনে না রাখতে পারলে তা পরবর্তী কালে বিভিন্ন হৃদরোগের ( যেমন হার্ট অ্যাটাক , স্ট্রোক ) কারন হতে পারে । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে আমাদের দেশে ( ভারতে ) মোট মৃত্যু সংখ্যার ৬৩% মৃত্যু অসংক্রামক রোগের কারনে হয় এবং এর মধ্যে ২৭% রোগী হৃদরোগের কারনে মৃত্যু হয় , যাদের মধ্যে ৪৫% রোগী ৪০ – ৬৯ বছর বয়সীদের মধ্যে রয়েছে ।
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের শ্রেণীবিভাগ
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয় , একটি হল প্রাইমারি হাইপারটেনশন অপরটি সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন । প্রাইমারি হাইপারটেনশনে উচ্চ রক্তচাপের পেছনে অন্য কোন রোগ দায়ী থাকে না কিন্তু সেকেন্ডারি হাইপারটেনশনের জন্য কনও না কনও রোগ দায়ী থাকে ।
তাছাড়া ব্লাড প্রেসারের মাত্রা অনুযায়ী হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ কে বিভিন্ন স্টেজ এ ভাগ করা হয় –
ব্লাড প্রেসারের মাত্রা | শ্রেণীবিভাগ |
১২০/৮০ | স্বাভাবিক |
১২০-১২৯ / ৮০-৮৪ | প্রাইমারি হাইপারটেশন |
১৩০-১৩৯ / ৮৫-৮৯ | প্রাইমারি হাইপারটেশন ( বোর্ডারলাইন ) |
>১৪০ / ৯০ | হাইপারটেশন |
১৪০-১৫৯ / ৯০-৯৯ | হাইপারটেশন ( স্টেজ – ১ ) |
১৬০-১৭৯ / ১০০-১০৯ | হাইপারটেশন ( স্টেজ – ২ ) |
> ১৮০ / ১১০ | হাইপারটেশন ( স্টেজ – ৩ ) |
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের কারন
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের পেছনে বিভিন্ন কারন থাকতে পারে , তার মধ্যে কিছু হল –
- বংশগত কারন অর্থাৎ হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের পারিবারিক ইতিহাস ।
- অলস জীবনযাত্রা , শারীরিক পরিশ্রম না করা , সেডেন্টারি লাইফস্টাইল, ।
- বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা বাড়তে থাকে বিশেষত বয়স ৫০ বছরের উপরে হলে ।
- বেশী ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাওয়া , অতিরিক্ত ফ্যাট ,তেল খাওয়া ( স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল ) ,রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট ( চিনি, ময়দা ) , লবন ( সোডিয়াম ) ইত্যাদি খাবারের সঙ্গে বেশী খেলে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা বেড়ে যায় ।
- শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গেলেও হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে ।
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ হলে কী কী সমস্যা হতে পারে
- কিডনির অসুখ , কিডনি ফেইলিওর ।
- হৃদরোগ , কারডিও ভাস্কুলার ডিজিজ , হার্ট অ্যাটাক , স্ট্রোক , হার্ট ফেইলিওর ।
- চোখের সমস্যা ,চোখের রেটিনার সমস্যা , চোখে ঝাপসা দেখা এবং
- সর্বশেষ ফলাফল মৃত্যু ।
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপে ডায়েট
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ একজন পুষ্টিবিদ সাধারনত কম ক্যালোরি , কম ফ্যাট , কম সোডিয়াম তার সঙ্গে স্বাভাবিক প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন । পাশাপাশি কিছু দৈনন্দিন জীবনযাত্রার উপদেশ দেন যেমন –
- স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখার জন্য চেষ্টা করতে হবে ( বি এম আই ১৮.৫ – ২৪.৯ ) ।
- বেশী করে ফল , শাকসবজি খেতে হবে ।
- খাবারে অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং সোডিয়ামের ( লবন ) পরিমান কম করতে হবে , ৬ গ্রাম এড় বেশী যাতে না হয় ।
- প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট শারীরিক পরিশ্রম অথবা ব্যয়াম করা প্রয়োজন।
- মদ্যপান এড় অভ্যাস থাকলে এটি কোম করতে হবে , আর একদম ছাড়তে পারলে আরও ভালো ।
Amarendra Haldar is An Nutritionist ( Currently Pursuing M.Sc in Diet And Food Service Management ) And Founder Of NutritionBangla.com , Also He is Working as a Health Wellness Blogger in Several Websites. |