পটাশিয়াম এর উৎস,কাজ,অভাবজনিত লক্ষণ এবং এর দৈনিক চাহিদা

পটাশিয়াম হল প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ ( মিনারেলস ) যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে।পটাশিয়ামকে ইলেকট্রোলাইট বলা হয়ে থাকে ,কারণ পটাশিয়াম স্বল্প পরিমাণে ইলেকট্রিকাল চার্জ বহন করে কোষ এবং স্নায়ুর কার্যকলাপ সক্রিয় রাখে। পটাশিয়াম প্রাকৃতিক ভাবে বিভিন্ন খাবার থেকে আমাদের শরীর সংগ্রহ করে। পটাশিয়ামের আসল কাজ হল শরীরের তরল পদার্থের মধ্যে বাকি সমস্ত খনিজ পদার্থের ভারসাম্য ঠিক রাখা। এছাড়াও পটাশিয়াম পেশিকে সক্রিয় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। 

পটাশিয়াম এর উৎস

আমাদের শরীরে পটাশিয়াম বিভিন্ন খাদ্যের মধ্যেই প্রবেশ করে যা প্রধানত আমরা নিম্নলিখিত খাদ্যগুলির মধ্যে পেয়ে থাকি। 

  • কলা
  • আলু
  • পালং শাক
  • কমলা লেবু
  • রাঙা আলু
  • দুধ
  • বিট
  • স্যালমন মাছ
  • দই
  • টমেটো 
  • কিসমিস
  • বিনস
  • এছাড়াও বিভিন্ন সবুজ শাকসবজি বা বিভিন্ন ফল ও ফলের রসের মধ্যে পটাশিয়াম থাকে। 

পটাশিয়াম এর প্রয়োজনীয়তা 

সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের প্রয়োজনীয়তা প্রায় একইরকম। পটাশিয়ামের কাজ শরীরের তরল পদার্থের মধ্যে বাকি সমস্ত খনিজ পদার্থের ভারসাম্য ঠিক রাখা। এছাড়াও পটাশিয়াম পেশিকে সক্রিয় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। 

পটাশিয়াম এর অভাবজনিত লক্ষণ

শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গেলে শারীরের বিভিন্ন কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়। যদি আপনার ঘনঘন বমি হয়, খুব বেশি ঘাম হয় এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না পান করেন, ঘন রঙের প্রস্বাব বার বার হলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কমে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা ভীষণ পরিমাণে কমে গেলে হাইপোক্যালামিয়া (Hypokalemia) রোগ দেখা যায়। এর ফলে শরীরে যে লক্ষণগুলি দেখা দেয় তা হল –

  • অস্বাভাবিক হার্টের ছন্দপতন দেখা দেয়
  • পেশি দুর্বল হয়ে যায়
  • এছাড়াও মানুষ প্যারালাইসিস ও হয়ে যেতে পারে।

পটাশিয়াম এর বৃদ্ধিজনিত লক্ষণ

শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে যে লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে তা হল-

  • নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা 
  • বুকে ব্যাথা
  • হার্টের সমস্যা 
  • বার বমি হওয়া 

যা আপনার জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে।

পটাশিয়ামের দৈনিক চাহিদা চাহিদা 

  • মহিলাদের ক্ষেত্রে ১৪-১৮ বছরের মধ্যে বয়স হলে তার প্রতিদিন ২৩০০mg পটাশিয়ামের প্রয়োজন।
  • ১৯ বছরের উর্ধ্বে যেকোনো মহিলার ২৬০০mg পটাশিয়ামের প্রয়োজন।
  • যেকোনো গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে পটাশিয়ামের চাহিদা ২৫০০-২৯০০mg যা বয়সের উপর নির্ভর করে।
  • পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৪-১৮ বছরের মধ্যে বয়স হলে পটাশিয়ামের চাহিদা হয় ৩০০০mg।
  • ১৯ বছরের উর্ধ্বে বয়স হলে পটাশিয়ামের চাহিদা ৩৪০০mg।

এই কারণে একজন পূর্ণ বয়স্ক মহিলার গড়ে ২৩২০mg এবং একজন পূর্ণ বয়স্ক পুরুষের ৩০১৬mg পটাশিয়াম নেওয়া প্রয়োজন।

পটাশিয়ামের পরিমাণ শরীরে বেড়ে গেলে বা কমে গেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রতিদিন সঠিক মাত্রায় পটাশিয়াম গ্রহণ করা প্রয়োজন যার জন্য দরকার একটি সঠিক ডায়েট প্ল্যানের। এছাড়াও পটাশিয়াম বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়ার যে লক্ষণগুলির কথা উপরে বলা হয়েছে তা যদি আপনার শরীরে দেখা দেয় তাহলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page