ডাইরিয়া এর কারন, উপসর্গ এবং প্রতিকার

ডাইরিয়া একটি খুব সাধারণ ব্যাধি যার অভিজ্ঞতা আমাদের মধ্যে বেশির ভাগ লোকের জীবনে  কোনও না কোন সময় হয়েছে । ডাইরিয়া হলে সাধারনত খুব ঘন ঘন ( দিনে তিন বারের বেশী ) পাতলা পায়খানা হয় ,যে কারনে আমাদের দেহে জল এবং  ইলেক্ট্রোলাইটগুলির ( বিশেষত সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম ) অভাব দেখা দেয় ।ফলস্বরুপ বমি বমি ভাব , পেট ব্যাথা, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয় ।

ডাইরিয়া এর কারন 

ডাইরিয়ার পেছনে বিভিন্ন কারন থাকতে পারে, এর মধ্যে কিছু কারন হল ব্যাক্টেরিয়া, প্রোটোজোয়া , এনজাইমের অভাব , খাদ্যের বিষক্রিয়া , ওষুধের পারস্বপ্রতিক্রিয়া । তাছাড়া এলার্জি, এডিসনের রোগ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস এর মতো বিভিন্ন রোগ এবং ব্যাধির লক্ষণ হিসেবেও ডাইরিয়া দেখা দিতে পারে । 

ডাইরিয়া হবার সম্ভবনা কাদের থাকে ?

বাচ্চা থেকে বুড়ো  যে কোনো মানুষের যে কনও বয়সে ডাইরিয়া হতে পারে। এমনকি কিছু মানুষের ডাইরিয়া বছরে বেশ কয়েকবার হয়ে থাকে। এটা খুবই সাধারণ একটি ব্যাধি যা তেমন একটা ঝুঁকিপূর্ণ হয় না, কিন্তু এটা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে গেলে স্বাস্থ্য এবং জীবনের জন্য  ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে । বিশেষত ছোট বাচ্চা, বয়স্ক  এবং শারীরিক দিক দিয়ে অসুস্থ এমন ব্যক্তির জন্য ।

ডাইরিয়ার উপসর্গ 

আমাদের দেহ থেকে পায়খানার সঙ্গে জল এবং ইলেকট্রোলাইট গুলি  ( বিশেষত সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম ) বেরিয়ে যায় ফলে শরীর তার  ভারসাম্য হারায় । ডাইরিয়ার ফলে যা উপসর্গ দেখা যেতে পারে তা হলো-

  • পেট ফুলে যাওয়া।
  • বার বার মল ত্যাগ করা।
  • বমি বমি ভাব লাগা।
  • পেট ব্যাথা করা ।
  • শরীর দুর্বল অনুভুত হওয়া ।

যদি আপনার গুরুতর ডাইরিয়া হয় তবে জে উপসর্গ গুলি লক্ষ করা যাবে তা হলো –

  • বার বার জর আসা।
  • ওজন কমে যাওয়া।
  • মারাত্মক ডিহাইড্রেশন।
  • পেটে তীব্র যন্ত্রণা।
  • বমি বা মলের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া।

গুরুতর ডাইরিয়া খুব ই জটিল সমস্যার সৃষ্টি করতে সক্ষম তাই এই লক্ষণ গুলি দেখা দিলে আর আপনার ডাইরিয়া নিজের থেকে ঠিক না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুব জরুরি।

ডাইরিয়ার প্রতিকার –

  • ডাইরিয়া হলে প্রথমত শরীরে জল এবং ইলেকট্রোলাইট গুলির ( বিশেষত সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম ) অভাব পূরণ করে নেওয়া প্রয়োজন । তার জন্য রোগীকে নারকেলের জল , বাটার মিল্ক , লেবুর সর্বত দেওয়া যেতে পারে । লেবুর সর্বত বানানোর জন্য এক লিটার জলের সঙ্গে এক চামচ লবন , দুই চামচ চিনি এবং সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নেওয়া ভালো । তাছাড়া বাজার থেকে ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট/শলিউশন (ORS)  কিনেও খাওয়ানো যেতে পারে । অবস্থার উন্নতি না হলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া  প্রয়োজন ।
  • পেঁপে,কলা, আপেলের রস,পেয়ারা,ডালিমের রস খাওয়ানো যেতে পারে, তবে উচ্চ মাত্রায় ফাইবার রয়েছে এমন সবজি এবং ফলমূল পরিহার করা প্রয়োজন ।
  • কাঁচা সব্জি, ভাঁজা তৈলাক্ত খাবার, দুগ্ধজাত খাবার আপাতত পরিহার করা ভালো ।
  • জল ফুটিয়ে পান করুন ।
  • খাবার একসঙ্গে বেশী খাওয়ার থেকে অল্প অল্প করে বেশি বার খাওয়ার চেষ্টা করুন ।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You cannot copy content of this page