ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এমন একটি যৌনজীবন জনিত সমস্যা যেখানে একজন পুরুষ বিশেষ মুহূর্তে পেনিসের ইরেকশন বজায় রাখতে অসফল হয় , যে কারনে ওই ব্যক্তি বা দম্পতির যৌন জীবন অসহনীয় হয়ে ওঠে ।
NIDDK র মতে ৩০ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে এই সমস্যা রয়ছে আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে আর নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যার সম্ভবনা বৃদ্ধি পেতে থাকে। অতিরিক্ত ধূমপান, শারীরিক ভাবে নিষ্ক্রিয়তা, টাইপ ২ ডায়াবিটিস বা হৃদরোগের মতন সমস্যা থাকলে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এর সমস্যা হতে পারে।
১৮-৪০ বছর বয়সের কিছু অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে একটা ২০১৮ সালের গবেষনা তে দেখা গেছে যারা নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করেন তাদের ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (Erectile Dysfunction) এর সমস্যা কম হয়ছে।
আজকে এই লেখাতে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন প্রতিরোধে কী কী ধরনের খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত এবং কী কী রাখা উচিত না সে বিষয়ে জানবো ।
ইরেক্টাইল ডিসফাংশনে কী কী খাওয়া উচিত
- নানা ধরনের ফল – একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিরা যদি বিভিন্ন ধরনের ফল ( যেমন- আপেল ,ব্লুবেরি ,স্ট্রবেরি, পেয়েরা, কলা প্রভৃতি ) খায় তাহলে ৯-১১% ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হওয়ার সম্ভবনা কমে যায় যারা কম ফল খায় তাদের চেয়ে। কম বয়স থেকে ফল খেলে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হওয়ার সম্ভবনা ১৯% কমে যায়।
- অলিভ অয়েল – সাত বছরের এক পরীক্ষাভিত্তিক সমীক্ষায় দেখা গেছে সাধারণ যেকোনো তেলের থেকে অলিভ ওয়েল খাওয়া ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হওয়া কমায়। কারণ অলিভ ওয়েলে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের পক্ষে খুব স্বাস্থ্যকর।
- মাছ – মাছে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা আপনার শরীরকে সঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং এর ফলে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়।
- চাল,গম, ও নানা ধরনের শস্য – শস্যজাতীয় খাবার যেকোনো লো ফ্যাট খাবারের চেয়ে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এর সমস্যার থেকে দূরের থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর।
- বাদাম – বিভিন্ন ধরনের বাদাম ( আল্মন্ড , কাজু ) ইরেক্টাইল ডিসফাংশন র সমস্যা দূর করতে সক্ষম এবং এটি একটি পরীক্ষায় প্রমাণিত।
- নানা ধরনের প্রাকৃতিক মশলা – বিভিন্ন মশলার মধ্যে যে উপকরণগুলি থাকে তা ইরেক্টাইল ডিসফাংশন র সমস্যা থেকে আপনাকে রক্ষা করে।
- সবুজ শাক সবজি – সবুজ শাকসবজি শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা বাড়ায় আর আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন র সমস্যা ও দূরে থাকে।
- চা বা কফি – একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যারা বহুবছর ধরে চা এবং কফি পান করে আসছেন তাদের মধ্যে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন র সমস্যা প্রায় দেখাই যায় না। এর কারণ হল কফির মধ্যে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ইরেক্টাইল ডিসফাংশন র মতো ব্যাধি কে দূরে রাখে।
ইরেক্টাইল ডিসফাংশনে কী কী খাওয়া উচিত নয়
- চিনি – অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাদ্য বা পানীয় নিয়মিত সেবন করা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক যা আপনার শরীরে ওজন এবং রক্তচাপ বাড়িয়ে তোলে। ফলে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়।
- হাই ফ্যাট যুক্ত খাবার – হাই ফ্যাটযুক্ত খাবার আপনার শরীরে অক্সিজেন ও রক্তে প্রবাহের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এর ফলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন দেখা দেওয়া খুবই স্বাভাবিক।
- মদ – এক সমীক্ষায় প্রমাণিত যত মানুষ রোজ মদ্যপান করে তাদের মধ্যে ৭২% মানুষের ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই এই সমস্যার থেকে দূরে থাকার জন্য নিয়মিত মদ্যপান করা উচিত নয়।
খাবার তালিকা সঠিক রাখা ছাড়াও ইরেক্টাইল ডিসফাংশন ( Erectile Dysfunction ) এর চিকিৎসা বিভিন্ন ওষুধ, ভেষজ পণ্য, বা নিয়মিত ব্যায়াম দ্বারা করা সম্ভব। কিন্তু এই সব পদ্ধতি মেনে চলার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নেওয়া প্রয়োজনীয়।
নমস্কার ,আমি বিনায়ক ব্যানার্জী। আশুতোষ কলেজ থেকে Communicative English hons. নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর শ্রীরামপুর কলেজ থেকে Mass communication and journalism এ ডিপ্লোমা করি। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সার (Health Blogger/Health Content Writer) হিসেবে কাজ করি।