জিঙ্ক হল আমাদের দেহে প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রো মিনারেল গুলোর মধ্যে একটি । এটি প্রতিদিন খুব কম পরিমানে আমাদের প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে আমাদের এই জিঙ্কের চাহিদা মেটাতে হয় ।
জিঙ্কের উৎস
- সামুদ্রিক মাছ বা প্রণের মধ্যে ১ থেকে ১০ mg
- মুরগির মেটে তে জিঙ্ক এর মাত্রা ৩.৫ mg
- মুরগির মাংসে জিঙ্ক এর মাত্রা১.০-২.০ mg
- গরুর মাংসে জিঙ্ক এর মাত্রা ৩.৯-৪.১ mg
- শুয়োরের মাংসে জিঙ্ক এর মাত্রা ১.৬-২.১ mg
- ডিমে জিঙ্ক এর মত্রা ১.১ mg
- দুধে জিঙ্ক এর মাত্রা ০.৪ mg
- Cheese এ জিঙ্ক এর মাত্রা ২.৮-৩.২ mg
- নানা ধরনের ডালে জিঙ্ক এর মাত্রা থাকে ০.৫-৭.০ mg
- গম বা গমের তৈরি জিনিস এর মধ্যে জিঙ্ক এর মাত্রা ০.৬-২.৭ mg
- চলে জিঙ্ক এর মাত্রা ০.৩-০.৬ mg
- পাউরুটি তে জিঙ্ক এর মাত্রা ০.৬-১.০ mg
- নানা ধরনের বাদামের মধ্যে জিঙ্ক এর মাত্রা ৬.০-১২.২mg
- নানা ধরনের সবজির মধ্যে জিঙ্ক এর মাত্রা ০.০৮-০.৬৮ mg
- নানা ধরনের ফলে জিঙ্ক এর মাত্রা ০.০৬-০.৫৮ mg
জিঙ্কের কাজ
জিঙ্ক আমাদের শারীরিক নানারকম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে চালানোর জন্য খুবই প্রয়োজন। বিভিন্ন এনজাইম এর মধ্যে থাকা জিঙ্ক, আমাদের হজম শক্তির ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও জিঙ্ক আমাদের শরীরের হাড় এবং কোষের গঠন সজাগ রাখে আর সেটা কে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই জিঙ্ক এর পরিমাণ কমে গেলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই জিঙ্ক আমরা মূলত নিজেদের খাবার থেকে সংগ্রহ করে থাকি। জিঙ্ক মূলত প্রোটিন যুক্ত খাবারের মধ্যে থাকে।
- ইমিউন সিস্টেম কে শক্তিশালী করে ।
- আমাদের শরীরে বিভিন্ন এনজাইমের কাজ কে প্রভাবিত করে ।
- ক্ষত নিরাময় ত্বরান্বিত করে ।
- ব্রন দূর করে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ।
- বিভিন্ন রকমের প্রদাহ কম করে ।
- যৌন স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে ।
জিঙ্ক এর অভাবজনিত ফলাফল
আমদের শরীরে জিঙ্ক এর ঘাটতি দেখা দিলে নানা ধরনের শারীরিক ও সমস্যা ও কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে যেমন-
- হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
- নানা ধরনের চামড়ায় ইনফেকশন হতে পারে।
- হজম ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
- ডাইরিয়া হতে পরে।
- জিঙ্ক এর অভাব আমাদের ইমিউন সিস্টেম কেও দুর্বল করে দেয় যার ফলে আমরা খুব সহজে যেকোনো রোগের কবলে পড়তে পারি দ্রুত।
- জিঙ্ক এর ঘাটতির কারণে সাধারণ মানুষও খুব দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং মারা যেতে পারে তাই নিয়মিত জিঙ্ক যুক্ত খাবার আমাদের নিয়মিত খাওয়া উচিত সঠিক মাত্রায়।
আমাদের শরীরে জিঙ্ক এর মাত্রা কতটা থাকা উচিত সেটা নির্ভর করে বয়স ওজন এবং লিঙ্গ অনুযায়ী।
- সদ্য জন্মানো শিশুর ওজন যদি ৬ kg হয় তার প্রতিদিন ২.৮mg জিঙ্ক এর প্রয়োজন
- ৯ kg ওজনে প্রয়োজন প্রতিদিন ৪.১mg
- ১২kg তে প্রয়োজন প্রতিদিন ৪.১-৮.৩mg
- ১৭ kg তে প্রয়োজন ৪.৮-৯.৬mg
- ২৫ kg তে প্রয়োজন ৫.৬-১১.২mg
- ৪৫-৫০ kg পুরুষের ১৫-১৮ বছর বয়স হলে ৭.২-১৪.৪mg
- ৪৫-৫০ মহিলা ১৫-১৮ বছর বয়স হলে প্রয়োজন ৮.৬-১৭.১ mg
- ১৯-৬৫ বছর বয়সী মহিলার ৫৫-৬৫ kg র মধ্যে ওজন হলে ৪.৯-৯.৮ mg
- ১৯-৬৪ বছরের পুরুষের ওজন ৫৫-৬৫ kg র মধ্যে ওজন হলে ৭.০-১৪.০ mg
- ৬৫ বছরের উর্ধে মহিলার ওজন ৫৫-৬৫ হলে ৪.৯-৯.৮mg
- ৬৫ বছরের উর্ধে পুরুষের ওজন ৫৫-৬৫ হলে ৭.০-১৪.০mg
জিঙ্কের দৈনিক চাহিদা
ICMR 2020, এর তথ্য অনুযায়ী একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দৈনিক ক্যালসিয়াম এর চাহিদা ১৭ মিলিগ্রাম , প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের ১৩.২ মিলিগ্রাম এবং গর্ভবতী মহিলাদের ১৪.৫ মিলিগ্রাম ।
বয়স, ওজন আর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে জিঙ্ক এর মাত্রা আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। তাই সঠিক জিঙ্ক এর মাত্রা জানার জন্যে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন। জিঙ্ক কমে গেলে যেমন আপনার শরীরের ক্ষতি হতে পারে তেমনি নানা সমস্যা জিঙ্ক এর মাত্রা বেড়ে গেলেও হতে পারে তাই নিয়মিত জিঙ্ক এর মাত্রা বজায় রাখার জন্য পুষ্টিকর ও উপযুক্ত খাবার সঠিক পরিমাণে খাওয়া প্রয়োজন। এছাড়া আপনি যদি কখনো জিঙ্ক এর পরিমাণ কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ অনুভব করেন তবে আপনার তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন।
নমস্কার ,আমি বিনায়ক ব্যানার্জী। আশুতোষ কলেজ থেকে Communicative English hons. নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর শ্রীরামপুর কলেজ থেকে Mass communication and journalism এ ডিপ্লোমা করি। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সার (Health Blogger/Health Content Writer) হিসেবে কাজ করি।