ঋতু পরিবর্তনের জেরে বাংলার ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি জ্বর। সঙ্গে রয়েছে পেটের সমস্যা। করোনা ভাইরাসের পর এবার ভয় ধরাচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস। অ্যাডিনো ভাইরাসটি একধরনের ডিএনএ ভাইরাস। ১৯৫৩ সালে এই ভাইরাসটি মানুষের নাক ও মুখের মাঝে অবস্থিত অ্যাডিনয়েড গ্ল্যান্ড থেকে পাওয়া গিয়েছিল। সারা পৃথিবী জুড়ে অ্যাডিনো ভাইরাসের বিস্তার। প্রকৃতির মধ্যেই অনায়াসে বেঁচে থাকতে পারে এই ভাইরাসটি। তাই মানুষ খুব সহজেই এই ভাইরাসের কবলে পড়েন। মানুষ থেকে মানুষে এবং প্রকৃতি থেকেও এই ভাইরাস সরাসরি শরীরে আসতে পারে।
কাদের ভয় বেশি?
ক্যান্সারের কেমো থেরাপি চলছে, স্টেরয়েড ওষুধ খেতে হয়, ব্রঙ্কাইটিস আছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, বাচ্চা, বয়স্ক সহ অন্যান্য কোনও কারণে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কমে গেলে এই রোগের সমস্যা বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
অ্যাডিনো ভাইরাসে মূলত শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে, স্কুল থেকেই শিশুদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা সর্বাধিক। ফলে স্কুলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি ।জ্বর-সর্দি কাশিতে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগেরই শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ ধরা পড়ছে।
অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ (Adenovirus Symptoms)
জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া এবং শ্বাস নিতে সমস্যা। শিশুর দেহে এই ধরণের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। শিশুর বয়স যত কম, এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি। তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যে জ্বর না কমলে চিকিৎসককে দেখানো আবশ্যক। নাক বন্ধ হয়ে গেলে নুন জল ব্যবহার করা যেতে পারে। খাওয়ারের পরিমাণ এবং প্রস্রাবের পরিমাণের উপর অবশ্যই নজর রাখতে হবে।

অ্যাডিনো ভাইরাস মোকাবিলায় বাবা-মায়েদের কিছু জিনিস মনে রাখতে হবে –
৹ অসুস্থ শিশুকে স্কুলে পাঠানো যাবে না
৹ ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে
৹ বাস, ট্রেন বা অন্যান্য জায়গায় মাস্ক পরতে হবে
৹ যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক খাবার দরকার নেই
৹ জ্বর, মাথাব্যথা, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিলেই শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে
অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের কী কী খেতে হবে ?
1. অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের সব সময় হাইড্রেটেড রাখা প্রয়োজন। বেশি করে জল খাওয়াতে হবে।ORS মিশিয়েও জল দিতে হবে বাচ্চাকে।
2. প্রতিদিনের খেতে হবে প্রোটিনজাত খাবার। সয়াবিন, ডালের, পনির বা, মাছ-মাংস কিংবা ডিম।
3. কাঁচা হলুদ ছোট্ট টুকরো এক ফোঁটা মধু দিয়ে চিবিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে বাচ্চাকে। এছাড়া, দুধের সঙ্গেও কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
4. টক দইয়ে থাকা ফারমেন্টেড এনজাইম খাবার হজমের জন্য ভীষণ উপকারী। টক দইয়ে থাকে প্রোবায়োটিক উপাদান। প্ৰতিদিন দই দেওয়া যেতে পারে।