ক্যালোরি, কিলোক্যালোরি কি ?একজন মানুষের প্রতিদিন ক্যালোরি চাহিদা কত ?

ক্যালোরি হল শক্তি পরিমাপের একক ,বিশেষ করে ১ গ্রাম জলের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়াতে যে পরিমান শক্তি খরচ হয় তাকে ১ ক্যালোরি ( Cal ) বলা হয় ।

কিলোক্যালোরিও শক্তি পরিমাপের একক, বিশেষ করে ১ কেজি জলের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়াতে যে পরিমান শক্তির খরচ হয় তাকে ১ কিলোক্যালোরি ( KCAL ) বলা হয় । 

1 কিলোক্যালোরি (KCAL) = 1000 ক্যালোরি ( cal )

কিন্তু এটি যখন আমাদের খাবার দাবারের ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা হয় তখন খাবারে সুপ্ত থাকা শক্তির কথাই বোঝায় যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ভিভিন্ন শারীরিক প্রক্রিয়া এবং কাজকর্ম সুস্থ ভাবে চালিয়ে যেতে সহায়তা করে । 

আমরা যখন কোন প্যকেটজাত খাবার কিনি তখন এর প্যাকেটের  গায়ে Nutrition Information  দেখতে পাবেন যেখানে শক্তির একক হিসেবে ক্যালোরি না বরং কিলোক্যালোরি ( KCAL )  হিসেবেই প্রকাশ করা হয়ে থাকে । এই কিলোক্যালোরি  কেই আমরা ক্যালোরি বলে চালিয়ে দেই যা টেকনিক্যালি ভুল । যেমন ধরুন  “ ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থেকে আমরা ৪ ক্যালোরি শক্তি পাই” , এখানে কথাটা ক্যালোরি হবে না বরং কিলোক্যালোরি (KCAL) হবে অর্থাৎ কথাটা হবে এমন “  ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থেকে আমরা ৪ কিলোক্যালোরি (KCAL) শক্তি পাই “ ।

আমাদের প্রতিদিনের শক্তি চাহিদা খাবারে থাকা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট থেকে পুরন হয় । প্রতি এক গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন থেকে আমরা ৪ কিলোক্যালোরি (KCAL) শক্তি পাই আর ১ গ্রাম ফ্যাট থেকে আমরা ৯ কিলোক্যালোরি (KCAL)  শক্তি পাই ।

সব খাবারে কী সমান ক্যালোরি ( শক্তি )  থাকে ?

নাহ , সব খাবারে সমান ক্যালোরি থাকে না, আর সব খাবার থেকে আপনি সমান ক্যালোরি পাবেন না । বিশেষত যে খাবার গুলতে জলীয় ভাগ বেশি রয়েছে সেই খাবার গুলো কম ক্যালরির হয়ে থাকে অর্থাৎ এই খাবার থেকে কম পরিমানে শক্তি পাওয়া যায় । যেমন একটি মাঝারি সাইজের টমেটো থেকে আপনি মাত্র ১০ কিলোক্যলোরি শক্তি পেতে পারেন এবং একটি মাঝারি সাইজের শসা থেকে আপনি মাত্র ১২ কিলোক্যলোরি  শক্তি পেতে পারেন ।

আবার খাবারে উপস্থিত জলীয় ভাগ যত কমতে থেকে এর মধ্যে থাকা ক্যালোরিও তত বেশি থাকে মানে এই খাবার গুলো থেকে তুলনামুলক বেশি শক্তি পাওয়া যায়  যেমন একটি মাঝারি মাপের আপেলে ৬৫ কিলোক্যলোরি শক্তি পাওয়া যায় যাতে জলীয় ভাগ তুলনামুলক কম রয়েছে এবং এইভাবে আপনি যদি মাত্র ১০ টি আলমন্ড খান তাহলে আপনি ৮৫ কিলোক্যলোরি শক্তি পেয়ে যাবেন ।

সবার ক্যালোরি চাহিদা কী সমান হয় ?

নাহ, সবার ক্যালোরি চাহিদা সমান হয় না, প্রত্যেক ব্যাক্তির প্রতিদিনের ক্যালোরি চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন হয় এবং তা নির্ভর করে ব্যাক্তির বয়স, লিঙ্গ, শরীরের আকার, প্রতিদিনের কাজকর্ম ইত্যাদির উপর। ICMR – 2010 এর তথ্য অনুযায়ী –

  • একজন প্রাপ্ত বয়স্ক কম পরিশ্রমী পুরুষের প্রতিদিন ২৩২০ কিলোক্যলোরি শক্তির প্রয়োজন ।
  • একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মাঝারি পরিশ্রমী পুরুষের প্রতিদিন ২৭৩০ কিলোক্যলোরি শক্তির প্রয়োজন ।
  • একজন প্রাপ্ত বয়স্ক বেশী পরিশ্রমী পুরুষের প্রতিদিন ৩৪৯০ কিলোক্যলোরি শক্তির প্রয়োজন ।
  • একজন প্রাপ্ত বয়স্ক কম পরিশ্রমী মহিলার প্রতিদিন ১৯০০ কিলোক্যলোরি শক্তির প্রয়োজন ।
  • একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মাঝারি পরিশ্রমী মহিলার  প্রতিদিন  ২২৩০ কিলোক্যলোরি শক্তির প্রয়োজন ।
  • একজন প্রাপ্ত বয়স্ক বেশী পরিশ্রমী পুরুষের প্রতিদিন ২৮৫০ কিলোক্যলোরি শক্তির প্রয়োজন ।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You cannot copy content of this page