Iron Sources In Bengali

আয়রনের উৎস, কাজ, অভাবজনিত লক্ষণ এবং এর দৈনিক চাহিদা

আয়রন হলো আমাদের শরীরের একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রো মিনারেল যা আমরা মূলত নিজেদের খাদ্যের দ্বারা গ্রহণ করে থাকি। আয়রন আমাদের দেহের নানা ধরণের প্রক্রিয়া কে সচল রাখে।

আমরা জানি আমাদের রক্তে আয়রন থাকে আর সেই আয়রন এর মাত্রা কমে যাওয়ায় মানে হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা কমে যাওয়া অর্থাৎ অ্যানিমিয়া। আমাদের শরীরের ৬৭% আয়রন রক্তের মধ্যে থাকে কিন্তু বাকি আয়রন থাকে আমদের শরীরে নানা ধরণের আয়রন বা পেশী অথবা অন্য কোনো শারীরিক অংশে। তাই আয়রন এর পরিমাণ ও শারীরিক যোগান সঠিক রাখার জন্যে আয়রন যুক্ত খাবার খাওয়ির নিয়মিত অভ্যেস খুব গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। 

আমরা মূলত দুধরণের খাদ্য উৎস থেকেই আমাদের শরীরের নিমিয়িত আয়রন গ্রহণ করে থাকি। যখন এর উৎস প্রাণীজ হয় তখন তাকে হেম আয়রন এবং যখন উদ্ভিজ হয় তখন তাকে নন-হেম আয়রন বলা হয়। আমাদের শরীরে হেম আয়রন নন হেম আয়রন থেকে শোষণ ভালো হয় ।

আয়রনের উৎস –

  • মুরগির লিভারে  ৭.৫ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে।
  • মুরগির মাংসে আয়রনের মাত্রা ১.১ মিলিগ্রাম।
  • ডিমে আয়রনের পরিমাণ ১.১ মিলিগ্রাম।
  • বিভিন্ন মাছের মধ্যে আয়রনের পরিমাণ থাকে ১ থকে ২ মিলিগ্রামের মধ্যে।
  • রাজমা ডাল এ আয়রনের মাত্রা থাকে ২৫মিলিগ্রাম 
  • কিসমিস ও নানা প্রকারের বাদামে আয়রনের মাত্রা থাকে ২ থেকে ৬ মিলিগ্রাম র মধ্যে।
  • সোয়াবিন এ আয়রনের মাত্রা থাকে ২ মিলিগ্রাম।
  • পালং শাক এ আয়রনের মাত্রা ৩.৫ মিলিগ্রাম।
  • এ ছাড়াও আরো নানা প্রকারের শাক,সবজি,শস্য এবং ফল এর মধ্যে ১ থেকে ৫ মিলিগ্রাম আয়রন।

শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার জন্যে এই ধরণের খাবার নিয়মিত খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা শরীরে দৈনিক  আয়রন এর চাহিদা মেটায়।

আয়রনের কাজ

  • আয়রন আমাদের দেহে অক্সিজেন এবং নিউট্রেন্ট গুলোকে প্রতিটি কোষে পৌঁছে দিতে সাহাজ্য করে ।
  • আয়রন অ্যানিমিয়া কে প্রতিরোধ করে আমাদের শরীর ও মন কে তরতাজা রাখে ।
  • আয়রন আমাদের ইমিউন সিস্টেম কে আরও বেশী শক্তিশালী করে তোলে।
  • নতুন রক্তকোষ তৈরি হতে আয়রনের প্রয়োজন রয়েছে ।
  • শরীরে শক্তি উৎপাদন বাড়ায় ।

আয়রনের অভাবজনিত লক্ষণ

  • অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা দেখা দেয় ।
  • ক্লান্তি ভাব দেখা দেয় ।
  • দুর্বলতা ।
  • হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া ।
  • মাথাব্যাথা , মাথাঘোরা ।
  • বুকে ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট ।
  • ভঙ্গুর নখ ।

দেহে আয়রন কম থাকা যেমন ক্ষতিকর তেমনি বেশী থাকাও ভালো নয় কারন আয়রনের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে এর বিষক্রিয়া হয় যার জন্য লিভার, হৃদপিণ্ড, পেনক্রিয়াস খতিগ্রস্থ হতে পারে ।

আয়রনের দৈনিক চাহিদা

ICMR 2020, এর তথ্য অনুযায়ী একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দৈনিক ক্যালসিয়াম এর চাহিদা  ১৯ মিলিগ্রাম , প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের ২৯ মিলিগ্রাম এবং গর্ভবতী মহিলাদের ২৭ মিলিগ্রাম ।

ছেলেদের থেকে মেয়েদের আয়রনের চাহিদা বেশী থাকে, এর কারন হল মেয়েদের মাসিক ঋতুচক্র । ১০-১২ বছর বয়সী মেয়েদের ২৮ মিলিগ্রাম ,১৩-১৫ বয়সে ৩০ মিলিগ্রাম এবং ১৬-১৮ বছর বয়সী মেয়েদের ৩২ মিলিগ্রাম আয়রন প্রতিদিন প্রয়োজন ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

You cannot copy content of this page